রহস্যে ঘেরা সাতোসি নাকামোতো’র অজানা গল্প
যত দিন যাচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আমরা তত বেশী জানতে পারছি, তাই আমার মনে হয় এমন কেউ নেই, যে কিনা বিটকয়েনের আবিষ্কারকের নাম জানে না। তিনি আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন – সাতোশি নাকামাতো।
ইন্টারনেট জগতের গোপন বিষয় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সাতোশি নাকামোতো কে ঘিরে বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্র ও বিকৃত কিছু গল্প/ঘটনা। কেউ বিশ্বাস করে সাতোশি প্রোগ্রামারদের একটা দল, আবার কেউ এটিকে শুধুই ছদ্মনাম হিসেবে বিশ্বাস করে ফেলেছেন। সাতোসি নাকামোতো যেই হোক না কেন সম্ভবত নিজেকে লুকিয়ে রাখাটাই তাঁর জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।
সাতোসি ১৯৭৫ সালের ৫ই এপ্রিল জাপানে জন্ম গ্রহণ করেন বলে জানা যায়। লোকমুখে শোনা যায় যে, সাতোসি জাপানি বংশদ্ভূত তবে তিনি সেখানে বসবাস করেনি। এখন পর্যন্ত সাতোশি’র ব্যাপারে যা জানা যায় তা সবই অনুমানের উপর ভিত্তি করে পাওয়া।
সাতোশি নাকামাতো লুকিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে, তার কাছে ঠিক কতো পরিমাণ বিটকয়েন আছে তা কেউ জানে না। ধারণা করা হয় যে, সাতোশি’র কাছে প্রায় লক্ষাধিক পরিমাণ বিটকয়েন রয়েছে। আপনি যদি বর্তমান বিটকয়েনের গড় মূল্যের সাথে সাতোশি’র কাছে থাকা বিটকয়েনের তুলনা করেন তাহলে বুঝতে পারবেন সাতোশির সম্পদের পরিমাণ ঠিক কত!
এই বিষয়টিই এই মানুষটিকে উচ্চবিত্তদের দলে অন্তর্ভুক্ত করে। এতো বিশাল পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ায় সাতোশি নাকামোতো’র মূল পরিচয় এখনো প্রকাশ পায়নি। তাই বছরের পর বছর বিভিন্ন রকম গবেষণা চলেছে এবং অনেক গুঞ্জনও তৈরী হয়েছে, এই মানুষটিকে নিয়ে। চলুন আমরাও সেরকমই উল্লেখযোগ্য কিছু নির্ভরযোগ্য তথ্য জেনে আসি –
সময়ের বিবর্তনে সাতোশি নাকামোতোর নাম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এমন অনেক জনকে পাওয়া গিয়েছে যাদেরকে সাতোশি নাকামোতো বলে ধারণা করা হয়। আমরা আজ এমন কিছু মানুষ সম্পর্কে জানবো যাদের কে সাতোশি নাকামোতো বলে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছেঃ
সাতোশি নাকামোতোর মতো সুপরিচিত একজন মানুষের সাথে কার তুলনা হতে পারে! ডোরিয়ান নাকামোতো, যে কিনা পদার্থবিজ্ঞানে সুদক্ষ এবং সংখ্যার শ্রেণী বিন্যাস নিয়ে কাজ করা একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। পাশাপশি তিনি একজন Libertarian রাজনৈতিক দল সমর্থক এবং তিনি তার মেয়েকে এমন ধরণের প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন যা কিনা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
এরকম আরো কিছু বিষয় সমূহ ভাবতে বাধ্য করে যে তিনিই বিটকয়েনের আবিষ্কারক। ডোরিয়ান জনসমুক্ষে এই কথা স্বীকার করেছেন যে বিটকয়েনের সাথে তার কোনোরকম সম্পর্ক নেই।
আরেকটি জনপ্রিয় ধারণা থেকে জানা যায়, হাংগেরীয় বংশদ্ভূত আমেরিকান নিক স্ক্যাবো হচ্ছেন ‘সাতোসি নাকামোতো’। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিপ্টোকারেন্সীর বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন এবং বিটকয়েন আবির্ভুত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই ধরনের বিষয় নিয়ে কাজ করেছিলেন। তিনি Bit Gold নামে এমন একটি কনসেপ্ট তৈরী করেছিলেন যা অনেকটা বিটকয়েনের মতোই। নিক স্ক্যাবো নিজেই এই গুজব অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন তিনি সাতোসি নাকামাতো নন।
উপরে আলোচিত মানুষগুলোকে যেমন সাতোশি নাকামোতো বলে মনে করা হয় সেখানে ক্রেইগ স্টিভেন রাইট তাদের মত নন। যেখানে অন্যরা এই গুজবকে অস্বীকার করেছেন সেখানে তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনিই সাতোশি নাকামোতো। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ক্রেইগ স্টিভেন রাইট সংবাদ ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তার বিটকয়েনের আবিষ্কারক হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেন। যদিও তিনি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিতে অস্বীকার জানান।
এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য হ্যাকারদের কাছে বিভিন্নরকম চাপ আসতে থাকে। এরপর ই-মেইল ও হরেক রকম ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা যায় যে, সাতোশি নাকামোতো একটি ছদ্মনাম যা কিনা ‘রাইট ও ডেভিড ক্লেইম্যান’ নামক দুজন কম্পিউটার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ব্যবহার করতেন। তবে এও জানা যায় ডেভিড মারা গিয়েছেন।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ পাওয়ার পর, অস্ট্রেলিয়ান ট্যাক্স অথোরিটি তার বাড়ি ও অফিসে পুলিশের মাধ্যমে হানা দেয় এবং সেখানে তারা কিছু অদ্ভুত সংখ্যা আবিষ্কার করে। এর কিছু মাস পর ২০১৬’র মে তে ক্রেইগ স্টিভেন রাইট জনসম্মুখে ব্লগ পোষ্টের মাধ্যমে স্বীকার করেন। তারপর একদল হ্যাকার এটা প্রমাণও করে যে ক্রেইগ মিথ্যা বলছেন। একটা সময় পর এটা প্রকাশ হয়ে যায় কানাডিয়ান সংস্থা নিজেদের সুনামের জন্য এই রটনা রটিয়ে ছিলো।
যদিও সাতোসি নাকামোতোর পরিচয় অজ্ঞাত, তবুও বিশ্বাস করা যায় যে NSA জানে কে এই সাতোসি নাকামোতো। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে এর সম্পর্কে রিপোর্টগুলো অনেক কিছুকেই ইঙ্গিত করে।
লোক মুখে শোনা যায়, Stylometry প্রযুক্তি ব্যবহার করে NSA সাতোসি নাকামোতো ‘কে’ চিহ্নিত করা হয়েছিল। সাতোসি নাকামোতোর লেখা অনেক পাবলিক পোস্ট ও ইমেইল রয়েছে। NSA তাঁকে চিহ্নিত করতে Stylometry প্রযুক্তির রাইটার ইনভ্যারিইন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল। যেভাবে কাজটি করা হয় বলে দাবি করা হয় তেমন একটা নমুনা এখানে দেওয়া হল।
সাতোসি’র ব্যবহৃত ৫০ টি সাধারন শব্দ খুজে পাওয়ার পর, NSA তার লেখাকে ৫০০০ শব্দের অংশে ভাগ ও বিশ্লেষণ করে এবং এই ৫০ শব্দের ব্যবহার খুজে বের করে। প্রত্যেক অংশের জন্য ৫০ নম্বরের নির্দেশক ফলাফল হিসেবে বিবেচিত হয়। NSA তারপর প্রতিটি সংখ্যাকে ৫০ মাত্রিক স্থানে স্থাপন এবং প্রধান উপাদান বিশ্লেষণ ব্যবহার করে সেগুলোকে সমতলে প্রতিস্থাপন করে। এই ফলাফল সাতোসির যে কোন লেখাকে অন্য লেখার সাথে তুলনা করতে ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ হিসেবে কাজ করে।
সবশেষে, “কে এই ব্যক্তি” তা বের করতে ওয়েব থেকে পাওয়া ট্রিলিয়ন সংখ্যক লেখার ‘হাতের ছাপ’ থেকে এটা নিশ্চিত হওয়া যায়! অবশ্য একটি সম্ভাব্য মিল পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু সেখান থেকে তেমন কিছু প্রমাণ হয় না। অনেক গবেষক মনে করেছিলো, তৎকালীন ওবামা সরকারের অর্থনীতিকে অচল করতে সাতোশি নাকামোতো একজন রাশিয়ান বা চাইনিজ এজেন্ট ছিলো।
যাইহোক, সাতোশি নাকামোতো কে তা আসলে অজানাই থেকে গেলো এবং একটি অমিমাংশিত রহস্য হিসেবেই ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হলো।
সুদীর্ঘ এই লেখাটি আগ্রহের সাথে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এই লেখাটি সম্পন্ন করতে আমার সাথে বিশেষভাবে কয়েকজন তাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় দিয়েছেন, তাদেরকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
এই লেখাটি সম্পাদনা করা হয়েছে জানুয়ারি ১, ২০১৯ ৯:২২ অপরাহ্ন
replica Hublot watches .iwc replica uk UK automatic cheap replica watches for men here are at affordable…
Our AAA Best Breitling Replica Watches Online Store offer cheap Swiss Breitling Replica with top quality, 60…
replica watches uk If you like forever classic fake watches, you cannot miss the uk…
Fast shipping and quality guarantee. Ordering UK cheap replica rolex watches from our online shop is a…